
নিজস্ব প্রতিনিধি।
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাথমিক অনুসন্ধানে আয়-ব্যয়ের মধ্য অসামঞ্জস্যতা খুঁজে পেয়েছে অনুসন্ধানকারি দল।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে দুদক সমন্বিত কার্যালয় পাবনার সহকারি পরিচালক সাধন কুমার সূত্রধরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধান শুরু করেছে।
দুদক সমন্বিত কার্যালয় পাবনার সহকারি পরিচালক সাধন কুমার সূত্রধর জানান, সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। অভিযোগের সংবাদের ভিত্তিতে আমরা আজ অনুসন্ধান শুরু করেছি।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন ভাউচার, লক বইসহ আয়-ব্যয়ের নথিপত্র তলব করেছি। পরিবহণ খাত, উন্নয়ন খাত, ছাত্র সংসদ খাত ও বিবিধ খাতের কাগজপত্র পর্যালোচনা করা হয়েছে। পরিবহণ খাতের লক বই পর্যালোচনা করে বেশ কিছু অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়েছে।
এছাড়াও উন্নয়ন তহবিল থেকে জানালা, বেঞ্চ, রেলিং ইত্যাদি মেরামত করা হয়েছে। কাঠ ক্রয় করে মিস্ত্রি দ্বারা এগুলো মেরামত করা হলেও যে মাস্টাররোল দেখানো হয়েছে সেগুলো সঠিক বলে মনে হয়নি। কেনা কাঠগুলো কোথায় ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলোও আমাদের দেখাতে পারেন নি। মাস্টাররোলের প্রশাসনিক অনুমোদন চাইলেও তা দেখাতে পারেননি অধ্যক্ষ।
তিনি বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধান আজকেই শেষ হবে। আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান করে আমরা কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাবো। কমিশন থেকে আমাদের যে সিদ্ধান্ত দেবে সেই সিদ্ধান্তের আলোকে ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর যোগদানের পর থেকে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গাড়ি রক্ষানাবেক্ষণ, চালকের বেতন এবং তেল খরচ বাবদ বছরে প্রায় ৬২ লাখ টাকা, মাউশি মহাপরিচালকের আগমন এবং খাবার বাবদ দেড় লাখ টাকা বিল করা হয়েছে।
শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য বাস না থাকলেও এ খাতে শিক্ষার্থীদের কাছে বছরে ২৫০ টাকা করে মোট ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করছেন। শিক্ষার্থী ভর্তিতে আইসিটি খাতে ৫০ এর যায়গায় দিগুণ ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। কলেজে প্রায় ২৫ হাজারে কাছ থেকে এক বছরে ১৫ লাখ টাকারও বেশি আদায় হয়েছে। প্রতি বছর ভর্তি ও ফরম পূরণের সময় শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে তোলা হচ্ছে। এ খাত থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা বাড়তি আদায় করেছে তিনি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি কোন টাকা আত্মসাত করিনি। আয়ের অর্থ নিয়ম মোতাবেক ব্যয় করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।